ভিডিও

রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত পালকি রয়েছে সযত্নে, সংকটে বেহারা সম্প্রদায় 

প্রকাশিত: মে ০৭, ২০২৪, ০৭:২৩ বিকাল
আপডেট: মে ০৭, ২০২৪, ০৭:৪৮ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

জয়নাল আবেদীন জয়, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়িতে তার ব্যবহৃত পালকিটি আজও সযত্নে রয়েছে। তবে ভাল নেই এর বহনকারী বেহারা সম্প্রদায়ের নতুন প্রজন্ম। পেশা হারিয়ে তারা পড়েছেন নানা সংকটে। বাপ-দাদা’র আদি পেশা ছেড়ে জীবন এবং জীবিকার তাগিদে তারা বিভিন্ন কর্মে জড়িয়ে পড়েছেন।

বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও স্থানীয়দের মতে, কবিগুরুর দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৪০ সালে নাটোরের রাণী ভবানীর কাছ থেকে শাহজাদপুরের জমিদারি কিনে নেন। উত্তরাধিকার সূত্রে পরে তা কবিগুরুর ওপর ন্যস্ত হয়। এই জমিদারি দেখভালের জন্য ১৮৯০ সালে প্রথম শাহজাদপুর কাছারিবাড়িতে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সে সময় এ জনপদে যোগাযোগ ব্যবস্থা বলতে ছিল নদী এবং গ্রামীণ মেঠোপথ। নদীতে নৌকা এবং মোঠোপথে ভরসা ছিল পালকি। এজন্য শাহজাদপুর জমিদারি দেখতে আসার সময় কবি তার পালকি বহনের জন্য ভারতের বর্ধমান জেলা থেকে ৯ জন বেহারাকে সাথে নিয়ে আসেন। তারা সবাই বাগদী সম্প্রদায়ের লোক। পালকি বহনই ছিল তাদের আদি পেশা।

শাহজাদপুরে এসে এরা মেঠোপথে কবিগুরুকে পালকিতে নিয়ে তার জমি-জমা দেখাশোনা করাতেন। কবি পালকিতে ঘুরে বেড়ানোর সময় গ্রাম বাংলার রুপ-প্রকৃতি দেখে কবিতা, গল্প লিখতেন। যা তিনি তার বিভিন্ন লেখায় তুলে ধরেছেন। তার প্রিয় বাহন পালকি পরিবহনের বেহারাদের থাকার জন্য কাছারিবাড়ির সম্মুখেই প্রায় এক একর জায়গা দেন। সেখানে তারা বসবাস শুরু করেন।

সেই থেকে শাহজাদপুরে তারা রয়ে গেছে। এক সময় কবিগুরু চলে গেলেও বেহারা সম্প্রদায়ের লোক এখানেই থেকে যান। সে সময় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না থাকায় তারা বিভিন্ন এলাকায় বিয়ে কিংবা অনুষ্ঠানে পালকি, ডুলি বহন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি আর যান্ত্রিক বাহন আসার পর পালকি, ডুলির সেই কদর হারিয়ে যায়। আয়, উপার্জন না থাকায় পেশা হারাতে থাকে এ সম্প্রদায়ের লোক।

বাগদী সম্প্রদায় সম্পর্কে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. শাহ আজম জানান, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত প্রিয় পালিকটি এখনো শাহজাদপুর কাছারিবাড়ি জাদুঘরে রক্ষিত আছে। কিন্তু সেই সম্প্রদায়ের লোক পেশা হরিয়েছে।

পালকি আমাদের দেশের ঐতিহ্যর অংশ। বেহারারা তারই অংশ। যেহেতু বিশ্বকবি তাদের এদেশে এনেছিলে, তাই তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে টিকিয়ে রাখা এখন সময়ের দাবি। আমি আশা করি সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS